মিষ্টি ভালোবাসা - জ্যোতি


--ওই শোন,কোনো কথা বলবি না তুই আমার সাথে...।(মেঘলা)
--কেন আমি আবার কি করলাম...!আর এই সকাল সকাল তোমার কি হলো একটু বলবে।(অভ্র)
--ওহহ তুই কিচ্ছু জানিস না তাই না...?থাক না তুই কিছু জানলে তোকে নতুন করে আর কি জানাবো।তুই যা ওই বস নিশির কাছে যা।
--মেঘলা,মেঘলা কি হয়েছে তোমার?তুমি কেন এমন করে কথা বলছো।আর তুমি তুই তুকারি করছো কেন?আর আমি না তোমার স্বামী।
--ইশ করবে না তুই তুকারি,আর বড় এলেন রে আমার স্বামী।ওই আমি কি তোমাকে এমনি তুই তুকারি করছি,তারজন্য যথেষ্ট কারন আছে আমার কাছে।
--হুমমম,সেটা তো বুঝলাম যে কোনো একটা কারন আছে।তো এবার সেই কারনটা বলে ফেলো।আমি না শুনলে বুঝব কি করে যে আমি কি করেছি।
--বোঝার দরকার নেই তোমার।তুমি ওই নিশির কাছে যাও।
--আমি এতটা মাসে তোমায় যতটা চিনেছি যে তুমি এমন মেয়ে নও যে আমার সাথে এমন করে কথা বলবে।
--কি চিনেছো????বাজে বর একটা।
--এই কি বললে...???
--বলেছি তুমি বাজে বর।তোমায় আমি কাল তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বলেছিলাম না।
--ওহহ,,,এই ব্যাপার।দেখো মেঘলা কাল অফিসে কাজের খুব চাপ ছিল।আর এতো কাজের মাঝে আমি ভুলেও গিয়েছিলাম।
--হুমম আমার কথা তো ভুলে যাবেই।আমি তোমার কে???
--কে মানে....!তুমি আমার এক এবং একমাত্র স্ত্রী।
--ওহহ তাই না....আমি তো তোমার এক এবং একমাত্র স্ত্রী।তাহলে কাল ওই নিশির সাথে কি করছিলা ওত রাত অব্দি..?
--আরে কি নিশি করছো বলো তো।ম্যাম এত রাতে অফিসে থাকেন না।আমরা কয়েকজন কলিগ মিলে একটা মিটিংয়ের আছে তার জন্য যা করতে হবে ব্যবস্থা করছিলাম।
--ওহহহ খুব ভালো।আর এদিকে যদি তোমার বউ মরেও যায় তাহলেও তোমার কিচ্ছু যায় আসে না।
--ওই কি বলছো এসব?কি হয়েছে তোমার?
--এখনো কিছু হয় নি এবার হবে।
--কি হবে???
--যা হবে তা তুমি নিজের চোখেই দেখতে পাবে।
--আরে কি করবে তুমি???দেখো মেঘলা কোনো পাগলামি করো না প্লিজ।
--কিসের পাগলামি?ওহহ এখন আমার ভালোবাসা তোমার কাছে পাগলামি মনে হয়...!
--আরে তা কখন বললাম।আমি বললাম তোমার আজ সকাল সকাল হঠাৎ কি হলো!আর তোমাকে আজ একটু অন্যরকম লাগছে।
--কিসের অন্যরকম?
--এই তুমি কাল খাও নি?
--না,খাই নি।
--কেন খাও নি
--আমার খেতে ইচ্ছে করে নি তাই খাই নি।আর তাতে তোমার কি!
--আমার কি মানে!আর শোনো এখন থেকে তোমার ইচ্ছা চলবে না।সব কাজ আমার ইচ্ছায় চলবে।আর তোমাকে সেটা মানতে হবে।
--কিইইইই...?পারবো না......আমি তোমার ইচ্ছামতো চলতে পারবো না।
--কেন পারবে না।পারতে তোমাকে হবেই।
--না পারবো না।বাজে বর
--ওই আবার!!!তবে রে দাঁড়াও এবারে তোমায় মজা দেখাচ্ছি
--ওই বাজে বর হাতটা ছাড়ো....
--না ছাড়বো না।বলেছি এখন থেকে সব আমার ইচ্ছায় চলবে।আমার যখন ইচ্ছে করবে আমি তোমার হাত ছেড়ে দিবো।
--আমার হাতটা ছেড়ে যাও তোমার ওই নিশির হাতটা ধরো।
--উফফফ,,,আবার ওই নিশি আমাদের দুজনের মাঝখানে?
--হুমম কেন থাকবে না।কাল ওর জন্যই তো তুমি আমাদের বিশেষ একটা মিস করলে।তাহলে ও আমাদের মাঝখানে কিভাবে না এসে পারে একটু বলবা।
--কাল কি ছিল!!!!কই আমার তো কিছুই মনে নেই।
--কি করবে আর মনে করে দিনটা তো চলেই গেছে।
--এই মেঘলা বলো না কাল ছিল?
--না বলবো না।
--বলো না।এই দেখ কান মুলছি,কান মুলছি।আমার ভুল হয়ে গেছে আমায় ক্ষমা দাও।কিন্তু প্লিজ বলো কাল কি ছিল?
--না বলবো না।
--আচ্ছা তুমি বলবে না।তাহলে থাকো আমি যাচ্ছি...।
--কই যাবা এতো সকালে?
--ওই যে আমার বসের বাসায়।
--আচ্ছা যাওওও.....ওই বজ্জাত দাঁড়াও।যেখানে দাঁড়িয়ে আছো সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকো আর এক পাও যদি এগোও তাহলে তোমার ঠ্যাং আমি ভেঙে দিবো।
--কেন আমি আবার করলাম!
--ওহহ তুমি কি করেছো তুমি সেটা জানো না তাই না।
--কই কি করলাম...
--বললে কেন তুমি ওই শাকচুন্নিটার যাবে এখন।
--কে শাকচুন্নি মেঘলা?
--ওই নিশি।তুমি জানো বোধহয় সেটা
--না জানতাম না আগে,আজ তুমি জানালে তাই জানলাম।
--মজা করছো আমার সাথে তাই না।করো করো তবে আমি কালকের দিনের কথাটা সারাজীবন মনে রাখবো আর তোমাকেও খুব কষ্ট দিয়ে মনে করাবো।
--আরে পাগলি বলো না কাল কি ছিলো।
--এখনো মনে পড়েনি তোমার।বাহ্ খুব ভালো।
--হুমম মানে না
--কি বললে?
--বললাম খুব বাজে
--তুমি বাজে বর।কাল কত তারিখ ছিল?
--আরে মনে নেই পাগলি।কাল কাজের চাপে তারিখটা ও ভুলে গেছি।
--তুমি আমার সাথে এমন করতে পারলে...!
--কি করলাম আবার!
--তুমি কালকের তারিখটাও দেখ নি।
--আরে কাল তারিখের তেমন একটা কাজ ছিলো না।তাই দেখার প্রয়োজনও পড়ে নি।আর দেখিও নি।
--খুব ভালো করেছে।
--আচ্ছা ঠিক আছে আজ দেখে নিচ্ছি।
--আজ দেখে লাভ কি।কালকের দিনটা কি আর ফিরে আসবে?
--কালকে কোনো বিশেষ দিন থাকলে আমি নিজেই অাবার ফিরিয়ে আনবো কালকের দিনটা।আচ্ছা আমাদের ক্যালেন্ডারটা কোথায়?
--নেই।
--কেন?? ছিলো তো
--হুমম ছিলো।কিন্তু আমি ফেলে দিয়েছি।
--এখন????
--কি এখন?
--তাহলে তো এবার তোমায় বলতে হবে যে কাল কি ছিলো।
--কাল ১৪ তারিখ ছিল।
--ইশ,,,(পাগলি কি এমনি ক্ষেপেছে)
--কি হলো?
--ব্যথা
--কোথায়???
--মনে।
--কি হলো আবার তোমার মনে?
--ওই কালকের দিনটা ভুলে গেছি তার শাস্তি এই ব্যথা।
--কাল কি ছিল মনে পড়েছে তাহলে?
--হ্যা পাগলি মনে পড়েছে
--কি ছিল?
--আমাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী।
--তুমি জানো আমি কাল কতো প্লান করেছিলাম।তোমার আসতে দেরি দেখে কতবার ফোনও দিয়েছি তুমি ধরো নি।
--কাল সত্যিই খুব বিজি ছিলাম পাগলি।আচ্ছা আজ তুমি আমায় যা শাস্তি দেবে আমি তা মাথা পেতে নেবো।
--ঠিক তো।প্রমিস...
--হুমমম প্রমিস
--কথা দাও কখনো অন্যকোনো মেয়েকে ভালোবাসবে না আমায় ছাড়া।
--এটা আবার বলতে হয়
--না হলেও তুমমি বলো।তুমি কিন্তু প্রমিস করেছো
--আচ্ছা বাবা প্রমিস।আর....
--আমায় নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজবে যখন আমি বলবো
--ওকে
--তোমার বুকে আমি মাথা আমি ঘুমাবো।সমসময় তোমার বুকে মাথা রেখে শুতে দেবে
--আমার মনের সবটা জায়গাই তোমার পাগলি
--হুমম সেটা যেনো সারাজীবন শুধু আমারই থাকে।জানো তোমার মুখে যখন অন্য কোনো মেয়ের কথা শুনি আমি সেটা সহ্য করতে পারি না।বড্ড হিংসে হয় আমার।
--আমার পাগলিতো দেখছি বড্ড হিংসুটে হয়েছে
--হুমম কেন হবো না।একশোবার হবো।
--কেন???
--কারণ তুমি শুধু আমার।তোমাকে আর অন্যকারো সাথে শেয়ার করতে পারবো না।
--হুমম আমি শুধুই তোমার আর তুমি শুধুই আমার।
--এখন আমার সব শাস্তির বড় শাস্তিটা হলো-
--হুমম বলো
--আজ সারাদিন আমার সাথে তোমাকে সময় কাটাতে হবে।বলো রাজি তুমি?
--হুমমম পাগলি আমি রাজি।
--আর কিছু চাই না আমার তোমাকে আর তোমার ভালোবাসা ছাড়া।আমাকে সারাজীবন তোমার বুকে আগলে রেখো বাজে বর আমার।আমি যে তোমায় আমার নিজের থেকেও বড্ড বেশিই ভালোবাসি।
--আমিও।


লিখেছেন 

কোন মন্তব্য নেই