বলেছি হাজার বার - Hridom


-তোমাকে আমি একবার
বলিনি আদিত্য,বলেছি হাজার বার।
আমার আরো একটা ছোট বোন আছে।
যে কোন সময় বিয়ের জন্য চাপ
দিতে পারেন আব্বু,কিছু একটা কর। শুনেছ
আমার কথা,এখন কি হবে?
আদিত্যকে কথাগুলো বলছে অরণী। কিন্তু
আদিত্যকে যেন নীরবতা গ্রাস
করে নিয়েছে। কোন কথাই বলছেনা।
রেগে গেল এবার অরণী।
-কি হল? আমার কথাগুলো কানে গেছে?
তুমি কি কিছু
করবে নাকি আমি বিয়েতে মত
দিয়ে ফেলবো?
মুখ তুলে এবার অরণীর
দিকে তাকালো আদিত্য। তারপর সেও
কিছুটা রেগে গিয়ে বললো " তোমার
কি মনে হয় কিছু একটা কর বললেই
করে ফেলা যায়?
এটাকি তুমি বললে,আমার
হাতটা ধরনা প্লীজ আর
আমি ধরে ফেললাম। এরকম কিছু?
সবে পড়াশুনা শেষ হলো।
চাকরী বাকরি এতই সোজা?
-তাহলে এখন কি করা? বিয়ের জন্য
বাসা থেকে কি পরিমাণ প্রেসার
যে দিচ্ছেন তা বলার না।
অরণীর কণ্ঠ দিয়ে হতাশা আর অসহায়ত্ব
মিলে মিশে একাকার।
-তুমি এক কাজ কর বাসায় যাও।
দেখি কি করা যায়?
আদিত্যের মাঝেও আত্মবিশ্বাসের বড্ড
অভাব দেখা যাচ্ছে।
অরণীর কিছুই করার নেই। অনেক দিন
বাড়ীতে মাস্টার্স শেষ করার অজুহাত
দেখিয়ে বিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছিলো।
গেল সপ্তাহে মাস্টার্স এর রেজাল্ট
হতেই যেন বিয়ে সংক্রান্ত বিষয় গুলির
বিষ্ফোরণ ঘটেছে। আদিত্য এখন গভীর
চিন্তায় মগ্ন। কিছুই আর বলবেনা সে।
অরণী তাই আদিত্যের কাছ থেকে বিদায়
নিয়ে চলে গেল। আদিত্য অরণীর
চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
দৃষ্টি সীমার
অপারে চলে যাওয়া অবধি আদিত্য
চেয়ে রইলো। তারপর উঠে দাঁড়ালো। এখন
সে আলো খাবে। সূর্যের আলো।
আদিত্যের যখন খুব মন খারাপ বা মেজাজ
গরম হয়ে যায় সে তখন চোখ বন্ধ
করে সূর্যের
দিকে হা করে দাঁড়িয়ে থাকে। খুব
কাজে দেয়। এভাবেই অরণীর
সাথে ক্যাম্পাসে পরিচয় হয়। আদিত্য
সেদিন তার বেস্ট ফ্রেন্ড ঈশানের
সাথে ঝগড়া করেছিলো। তারপর
রাগে আর দু:খে রোদে দাঁড়িয়েছিল
হা করে।
অরণী সেটা দেখে থমকে দাড়িয়েছিলো সেদিন
তার পাশে। ভয়ে কিছু বলতেও
পারছিলোনা। চুপচাপ দেখছিল আদিত্যের
আলো পান। আদিত্য হঠাৎ দেখে ওর
পাশে এক মেয়ে। অরণী সাথেই সাথেই
প্রশ্ন করেছিল"কি করছিলেন আপনি!
-সূর্যের তাপ নিয়ে মনটাকে শান্ত
করছি।
-হোয়াট?
-বাংলা বললাম বুঝলেননা? সান লাইট।
- সূর্যের আলোতে ভিটামিন
থাকে জানতাম কিন্তু
এভাবে হা করে সেই ভিটামিন খায় কেউ
আজ দেখলাম। -হুম দেখেছেন
তবে ভেবেছেন ভুল। আমি ভিটামিন
নিচ্ছিলামনা,আমি কিছু দিচ্ছিলাম।
-দিচ্ছিলেন!কি আর কাকে?
-কাউকে না। সূর্যের আলোতে আমার
রাগ আর দু:খটা মিশিয়ে দিচ্ছিলাম।
-হাও ইন্টারেস্টিং। ব্যাখ্যা করবেন
একটু?
-আসলে ব্যাখ্যার কিছু নাই। একেক
মানুষের একেক ধারণা বা অভ্যাস থাকে।
আমার অভ্যাস মন খারাপ হলে সূর্যের
আলোতে হা করে দাড়ানো। রাগ
করলেও। আমার একটা বিশ্বাসও
বলতে পারেন। সূর্যের আলো রাগ,মান-
অভিমান,দু:খ সব কিছু গ্রাস করে নেয়।
তবে ঠিকমতো মন থেকে সূর্যকে আহবান
করতে হবে।
এইভাবেই ব্যাখ্যা করেছিল আদিত্য
সেদিন। অরণী তখন উল্টো প্রশ্ন
করেছিলো "যেদিন আকাশ
মেঘলা থাকে বা বৃষ্টি হয় সেদিন সান
লাইট পাবেন কই?
অরণীর প্রশ্নে আদিত্য সেদিন
বলেছিলো "বৃষ্টি থাকলে মন
ভালো করার এই পদ্ধতি কাজ
করেনা,তাছাড়া বৃষ্টির সময় মন খারাপও
হয়না।
তবে মেঘলা থাকলে প্রক্রিয়াটা ধীর
গতিতে হয়।
-বাহ খুব মজারতো।
-হতে পারে। তা আমি যাই এখন।
বলেই আদিত্য হাটা শুরু করলো। পেছন
পেছন ছুটে এল অরণী।
-আপনার নামটা?
-আদিত্য।
-আমি অরণী।
"অহহ। উত্তরে এটুকুই বলেই আবার
চলতে শুরু করেছিলো আদিত্য।
এটাই ছিলো আদিত্য আর অরণীর প্রথম
আলাপ। আর সেদিনই আদিত্যকে অরণীর
ভালো লেগে গিয়েছিলো।
-এই ছেলে তোমার নাম আদিত্য?
চিন্তার দুনিয়া থেকে আচমকা যেন
বাস্তবে ফিরে এলো আদিত্য। মুখ বন্ধ
করে পাশে চেয়ে দেখে এক
মাঝবয়সী মানুষ। বেশ স্মার্ট। নাকের
ডগায় খয়েরী ফ্রেমের চশমা। এই টাইপ
মানুষের মাথায় চুল কম থাকে কিন্তু এই
ভদ্র লোকের মাথায় যথেষ্ট চুল।
সমস্যা চুলে নয়। সমস্যা অন্যখানে।
মানুষটাকে খুব চেনা চেনা লাগছে।
কোথায় যেন দেখা হয়েছে আগে এমন
মনে হচ্ছে আদিত্যের। কিন্তু
মনে করতে পারছেনা।
-কি হল চুপ করে আছ কেন,তুমিই
তো আদিত্য তাইনা?
লোকটার কণ্ঠে আর চেহারায়
একটা বিরক্তির ছাপ। ভ্রু কোঁচকে আছে।
-জ্বী আমি আদিত্য। কিন্তু
আপনাকে তো চিনলামনা!
-চিনার কথা না। আমাদের
আগে কোনদিন দেখা হয়নি।
আমি তোমার ওই উদ্ভট
পাগলামী দেখে চিনেছি। সূর্যের
দিকে হা করে দাঁড়িয়েছিলে দেখেই
বুঝেছি তুমি আদিত্য।
বসে বসে চা খেতে তোমার সাথে আলাপ
করার রুচি আমার নেই। ঐ দিকটায়
আস,গাছের নীচে। তোমার
সাথে কথা আছে।
একথা বলে আগন্তুক ব্যাক্তি সামনের
বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছের
দিকে হাটা ধরলেন। আদিত্য
যাবে কি যাবেনা ভাবতে ভাবতে পেছন
পেছন গেল। মানুষটা গাছের নীচে গিয়েই
বুক পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট
বের করে একটা সিগারেট ঠোঁটে নিলেন।
-তোমার কাছে লাইটার
আছে বা দিয়াশলাই?
আদিত্যের কাছে দিয়াশলাই আছে কিন্তু
বললো, -জ্বী না,নেই।
-আমার মনে হচ্ছে আছে।
তুমি মিথ্যা বলছো। ভদ্রতাও দেখাচ্ছ
বলা যায়। বাবার বয়সী লোক আমি। তাই
না? এত ভদ্রতা দেখানোর প্রয়োজন নেই।
আমি তোমার
বাবা,চাচা বা মুরব্বী কোন আত্মীয় না।
দাও,আগুন দাও।
আদিত্য ফায়ার বক্সটা বের করে দিল।
আদিত্য তার মস্তিষ্কের প্রতিটা সেলের
সাথে লড়ছে। মানুষটাকে পরিচিত
মনে হচ্ছে কেন!
কূলকিনারা পাচ্ছেনা আদিত্য
প্রশ্নেটার।
সিগারেট ধরিয়ে দিয়াশলাইটা ফিরত
দিতে দিতে ভদ্রলোক কথা শুরু করলেন
আবার।
-আমার ছোট মেয়ের মুখে তোমার
কথা শুনতে শুনতে কান
ঝালাপালা হয়ে গেছে। আমার ছোট
মেয়ের নাম আদ্রিতা। ওর বড় বোন ওর
সাথে সব শেয়ার করে। আর
সেগুলো আদ্রিতা আমাকে বলে।
বুঝতে পারছো এবার আমি কে?
অরনীর বাবা!!! ওহ গড। আদিত্য
মনে মনে নিজেকে থাপড়ালো। এই সহজ
বিষয়টা ধরতে পারেনি বলে। অরণীর
চেহারার সাথেই মিল
খোঁজে পাচ্ছিলো এতক্ষন।
অরণী যদি জানে একবার আমি ওর
বাবাকে সিগারেট
জ্বালানোর জন্য নিজের পকেট
থেকে দিয়াশলাই বের
করে দিয়েছি! আর কিছু
ভাবতে পারলোনা আদিত্য।
-কি হল তোমার,কি ভাবছ?
-জ্বী না কিছু না।
-শুনো আমি যেদিন প্রথম আদ্রিতার
কাছে জানতে পারি যে,অরনী একটা আলো খাওয়া ছেলেকে পছন্দ
করে সেদিনই বুঝেছিলাম
ছেলেটা ধান্দাবাজ হবে। কারণ
এইসব উদ্ভট কাজ কারবার
যারা করে তারা মানুষকে মুগ্ধ
করে ফেলে সহজে। আর এটাই তাদের
টোপ। টোপ
ফেলে একটা বাজে ছেলে আমার
মেয়েকে পটিয়ে ফেলেছে এটা ভাবতেই
আমার সারা শরীর রাগে কাঁপতো।
বুঝেছো?
-জ্বী।
-জ্বী মানে? তোমার কিছু বলার নেই?
-জ্বী না।
-কেন?
অরনীর বাবার ফর্শা মুখ
লালচে হয়ে যাচ্ছে। উনি রেগে যাচ্ছেন।
-আমার সাথে দেখা হবার
আগেইতো আপনি আমাকে জায
করে ফেলেছেন। ধারনা তৈরী করেছেন
আমার সম্পর্কে। আর
ধারণা বা বিশ্বাস খুব শক্ত জিনিস।
আমি কিছু বললেও আমার
সম্পর্কে আপনার ধারণা বদলে যাবেনা।
-তার মানে আমার ধারণা ভুল?
তুমি আমার মেয়েকে তোমার
উদ্ভট কর্ম কাণ্ড দিয়ে মুগ্ধ করনি?
-না।
-ব্যাখ্যা কর।
-আপনার ভাষায় আমার উদ্ভট কাজ
দেখে আপনার মেয়ে মুগ্ধ
হতে পারে কিন্তু আমি ওকে মুগ্ধ করার
জন্য কিছু করিনি।
অরণীর সাথে আমার পরিচয় তিন বছর
ধরে আর আমি সূর্যের
আলো দিয়ে মন ভালো করি,রাগ দূর
করি ২০ বছর আগে থেকে।
সুতরাং অরণীর প্রতি আমার
ভালবাসাটা কোন টোপ না।
তাছাড়া আপনি এগুলিকে উদ্ভট উদ্ভট
না বললে আমি খুশী হব। কারণ
আমি পাগল না।
-
শুনো ছেলে আমি তোমাকে খুশী করতে আসিনি এখানে।
জানাতে এসেছি আমার মেয়ের বিয়ে।
ওর সাথে যোগাযোগ না রাখলেই
ভালো করবে।
-জ্বী আচ্ছা।
-জ্বী আচ্ছা মানে? কিছু বলবেনা এ
বিষয়ে?
-আমি কিছু বলি সেটাই কি চাচ্ছেন?
-বলতে পার অনুরোধ ছাড়া। তোমার
কাছে আমি আমার
মেয়ে বিয়ে দেবনা কোনদিন।
-আপনার অরণীর সুখ চাইলে অন্যকোথাও
বিয়ে না দিলেই
ভালো হবে।
-তোমার
কাছে বিয়ে দিলে সে সুখী হবে! হাউ
ফানি!
ওর ক্ষুধা লাগলে কি ওকে সূর্যের
আলো খাওয়াবে? কি কর তুমি,বাপের
কি আছে?
-কিছুই নেই
হয়তো তবে আমি যা খেয়ে বেঁচে আছি সেও
তাই খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।
-শুধু তিন বেলা খেলেই জীবন ধারণ
করা যায়না।
-আমাকে এসব শুনাচ্ছেন কেন তবে?
আপনি অরণীকে যেকোন জায়গায়
বিয়ে দিতে পারেন। আমার সমস্যা নেই।
-তোমার সমস্যায় আমার কি আসে যায়?
-যায়না,তবুও আশ্বস্থ করলাম।
ফায়ারবক্সটা আবার
দাও,আরেকটা সিগারেট ধরাতে হবে।
বাধ্য ছেলের মতো ফায়ারবক্স বের
করে দিল আদিত্য। এখন আর ভদ্রতার
মানে নেই।
-আচ্ছা তুমি কি আমাকে ইম্প্রেশ করার
জন্য কিছুই করবেনা?
মুখ ভর্তি ধূয়া ছাড়তে ছাড়তে প্রশ্ন
করলেন অরণীর বাবা।
তেমন কিছু করলে সেটা টোপ
ফেলা হয়ে যাবেনা? আপনিই
তো বললেন আমি টোপ
ফেলে মানুষকে মুগ্ধ করি।
-আমি এত উজবুক
না যে তুমি উল্টা পাল্টা কিছু করলে আর
আমি আহ্লাদে গদগদ হয়ে বললাম,
বাবা আমার অরণীর জন্য তুমিই
পারফেক্ট।
-আসলে আপনাকে মুগ্ধ করার ইচ্ছা আমার
নেই। সত্যি কথা বলতে কি কাউকে মুগ্ধ
করার কোন স্পেশাল একটিভিটিজও
আমার জানা নেই। আমি যা করি সবই
আমার জন্য স্বাভাবিক। আপনি যেমন
শরীরের কোন ব্যাথার জন্য পেইন কিলার
নেন আমি তেমনি কষ্ট পেলে আলো নেই।
আপনার মন খারাপ হলে হয়তো গান শুনেন
আমি আলো নেই। এই সূর্যের আলোই
আমার সব। তাই আমাকে পাগল ভাবার
কিছু নেই। সবারই কিছু চিন্তা ধারা আর
নিজস্ব জগত থাকে।তাছাড়া আমি কোন
জোকার না কিংবা চিড়িয়াখানার
চিড়িয়া না, যে কেউ চাইলো আর
আমি তাকে ইম্প্রেশ করা শুরু
করে দিলাম।
ইচ্ছে করেই এভাবে বললো আদিত্য
যাতে অরণীর বাবা রেগে যান।
-হোয়াট!আমাকে তুমি যে সে বলছো?
ডাক্তার আনোয়ার পারভেজ
এফ,সি,পি,এস কে তুমি যে সে বলছো? হু
দ্যা হেল ইউ আর? ইউ আর এ চিপ এন্ড
স্টুপিড পোর ম্যান।
রাগলে অরণীর
বাবা ইংরেজীতে গালাগালি করেন।
এখনো তাই করছেন।
-আমি কি আমি জানি। আর আপনিও জন্ম
থেকে এফ,সি,পিএস আনোয়ার পারভেজ
না। আমার মনে হয় এখন যাওয়া উচিৎ
আমার। আমার আমিত্বের
পরীক্ষা দিতে আমি বাধ্য নই।
-অফকোর্স। গ এওয়ে ফ্রম হিয়ার
ইমিডিয়েটলি এন্ড লিসেন আই ডোন্ট
ওয়ানা সি ইয়র ফেইস এগেইন।
-শুনলাম কিন্তু
কথা দিতে পারলামনা,কারণ
পৃথিবীটা গোল। আচ্ছা স্যার
ভালো কথা ডাক্তাররা কি ডাক্তার
দেখাননা কখনো?
-কি বলতে চাচ্ছ?
-মানুষকে প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন
ধুমপান নিষেধ অন্যদিকে নিজেই সেই
নিষিদ্ধ জিজিনিস অবিরত নিচ্ছেন। এর
উপর এত রাগ! আপনার একজন
সাইক্রিয়াটিক দেখানো উচিৎ মনে হয়।
আনোয়ার পারভেজ সাহেব এবার আর
কোন ভাষায়ই কোন কথা বলতে পারলেন
না। কারণ তিনি আদিত্যের
কথা শুনে রাগে থরথর করে কাঁপছেন।
আদিত্য সেটা যেন খেয়ালই করলোনা।
-আপনার মেয়েকে আপনি আমার
কাছে কোনদিন
বিয়ে দেবেননা,তাছাড়া আপনি আমার
বাবা,চাচা বা মুরব্বী আত্মীয়ও না।
তাই একটা কথা বলার ছিল।
-কি!
অনেক কষ্টে শব্দটা উচ্চারণ করলেন
অরণীর বাবা।
-আসলে আমার পকেটে এই মূহুর্তে কোন
টাকা নেই। যদি আমাকে দুইটা সিগারেট
দিতেন তবে উপকার হতো।
পকেট থেকে সিগারেট এর
প্যাকেটটা বের করে রাস্তায়
ছুড়ে মারলেন পারভেজ সাহেব।
খুবই শান্ত আর স্বাভাবিক
ভাবে প্যাকেটটা তুলে নিল আদিত্য।
দেখলো দুইটাই অবশিষ্ট আছে। পেছন
ফিরে বললো
-অনেক ধন্যবাদ,আসি স্লামালিকুম।
তারপর হাটা শুরু করলো সে।
****
বিশ মিনিট পর অরণীর ফোন এল আদিত্যর
কাছে। কণ্ঠে চাপা উত্তেজনা।
-তুমি কোথায়?
-বাসায়।
-আব্বাকে কি শিখিয়ে দিয়েছ তুমি।
-তোমার আব্বাকে আমি পাব কোথায় আর
কি শিখাবো?
-মিথ্যা বলবেনা।
-আমি তোমার আব্বুকে চিনিই
না তুমি জান।
-জানি,মজা করলাম। মজার এক কাণ্ড
ঘটেছে আজ।
-কি?
-আব্বু বাসায় এসে উনার ব্যাগটা রেখেই
ছাদে চলে এলেন হনহন করে। আমি আর
আদ্রিতা পিছু পিছু
এসে দেখি উনি সূর্যের
দিকে হা করে করে আছেন অবিকল
তোমার মতো।
-হুম।
-হুম মানে! তোমার কাছে অস্বাভাবিক
লাগছেনা?
-না,রাগ লাগছে। উনি আমার কনসেপ্ট
পাইলেন কই?
-কিভাবে পেয়েছেন তাও জানি।
-কিভাবে?
-আদ্রিতা। আদ্রিতা আজ
আমাকে বলেছে সে নাকি তোমার সব
কথা আব্বাকে বলে দিয়েছে। বজ্জাত
মেয়েটাকে আমি বিশ্বাস করে বলতাম
সব আর সে আব্বুর কাছে পাস করে দিত
সব।
-তা তোমার আব্বু কোথায় এখন?
-অই তো আলো গ্রহন চলছে। হাহাহা।
আচ্ছা আমি রাখছি এখন।
-ওকে বাই।
***
অরনীকে ডাকছেন বাবা।
-জ্বী আব্বু?
-অরণী,ওই যে পাগল ছেলেটা, কি যেন
নাম?
-কোন ছেলে বাবা?
-ন্যাকামো করবিনা,এক চড় খাবি।
যে ছেলের সাথে ইয়ে করে বেড়িয়েছ
এতদিন ধরে।
-আদিত্য বাবা।
-হে হে আদিত্য। ওই আলোখোর
ছেলেটাকে আমার
সাথে দেখা করতে বলবি।

কোন মন্তব্য নেই